কলকাতা: রান্না ভালোবাসেন, খাওয়াতেও ভালোবাসেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেন। কিন্তু তার প্রেমিক ও টলিউডের ড্যাশিং অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরার একটি বিশেষ পছন্দের খাবার নিয়েই যত বিপত্তি! অঙ্কুশ ভালোবাসেন লটে মাছ খেতে, যা ঐন্দ্রিলার একেবারেই অপছন্দ। তবে ভালোবাসার মানুষের জন্য সব প্রতিকূলতা জয় করতে প্রস্তুত এই অভিনেত্রী। তাই বলে কি পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াবেন না? অবশ্যই খাওয়াবেন, আর তার পেছনে আছে এক মিষ্টি রহস্য!
ঐন্দ্রিলার কথায়, “অঙ্কুশের জন্য লটে মাছ রান্না করে দিই। চেটেপুটে খায়।” এই রান্নার পেছনে একটি গোপন রহস্য আছে বলেও জানান তিনি। সেই ‘সিক্রেট’ কী, জানতে চাইতেই খানিকটা সাবধানী হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা। মনের গোপন রহস্য ফাঁস করতে রাজি নন তিনি। তবু সাংবাদিকের জোরাজুরিতে এক গাল হেসে বলেই ফেলেন, “নামানোর আগে হালকা ঘি ছড়িয়ে দিই। গন্ধে ম-ম করে। খেতেও ভালো হয়।” এই ছোট্ট টিপসই যে অঙ্কুশের মন জয়ের মন্ত্র, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

ঐন্দ্রিলা শুধু লটে মাছের রহস্যই নয়, বাঙালি ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ ফ্যানা ভাত নিয়েও তার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। আতপ চালের গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ফ্যানা-ভাত, সঙ্গে আলু মাখা, কাঁচালঙ্কা আর অল্প ঘি-মাখন – যা অনেকের কাছেই সাক্ষাৎ স্বর্গ। তবে অনেকেই ফ্যানের গন্ধ পছন্দ করেন না। তাদের জন্যও ঐন্দ্রিলার, বা বলা ভালো তার মায়ের, কাছে রয়েছে বিশেষ দাওয়াই। অভিনেত্রী জানান, “মা এমন একটা ফ্যানা ভাতের রেসিপি বানায় না, উফফ মুখে লেগে থাকে। সামান্য ফ্যানা ভাত কিন্তু মা বানায় দুধ দিয়ে। ঠিক পদ্ধতিটা বলতে পারব না। তবে নুন-মিষ্টি দিয়ে এমনভাবে বানায় তা যেন অমৃতের সমান। ফ্যানের গন্ধ, টেরই পাওয়া যাবে না!” যোগ করে বলেন, “মা ভীষণ ভালো রান্না করেন। আমার মাসি, দিদা এমনকি ছোট বোন সবাই ভালো রাঁধুনি। সেটা কিছুটা হয়তো আমার মধ্যেও আছে।” রান্নাঘরের প্রতি এই ভালোবাসাই ঐন্দ্রিলাকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়।
নায়িকা মানেই ‘পটের বিবি’— এই মিথ ভেঙেছে বহু আগেই। ছুটির দিনে সুযোগ পেলেই অঙ্কুশের জন্য রান্নাঘরে হাতা-খুন্তি তুলে নেন ঐন্দ্রিলা। আর বানিয়ে ফেলেন এমন এক রেসিপি যা নাকি ‘বশ’ করে নিতে পারে অঙ্কুশকে। নায়িকার কথায়, “আমার হাতে চিকেন পোলাও খাইয়েই ওকে বশে করে নিতে পারি।” এটি শুধু একটি রান্না নয়, এটি তাদের ভালোবাসার বন্ধন আরও দৃঢ় করার একটি মাধ্যম।
শুধু রান্না করা নয়, ঐন্দ্রিলা স্বপ্ন দেখেন রেস্তোরাঁ খোলার। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি নয়, বরং কম তেলে বাড়ির স্বাদের রান্না নিয়ে রেস্তোরাঁ খোলার ইচ্ছে তার বহুদিনের। মাঝে এ নিয়ে ভেবেওছিলেন, তবে বাবার হঠাৎ মৃত্যুতে সে কাজে বাধা আসে। তবে আশা ছাড়েননি তিনি। স্বপ্ন দেখতে কে না ভালোবাসেন? ঐন্দ্রিলার এই স্বপ্ন তার উদ্যোক্তা সত্তাকেও তুলে ধরে।
১৩ বছরের প্রেম: বিয়ের অপেক্ষা কবে ফুরোবে?
অঙ্কুশের সঙ্গে ঐন্দ্রিলার ১৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক, যা টলিউডের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী এবং জনপ্রিয় জুটি। বর্তমানে লিভ-ইন সম্পর্কে রয়েছেন এই জুটি। প্রতি বছরই তাদের বিয়ের খবর রটে, কিন্তু ভক্তদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সাতপাকে বাঁধা পড়ার খবর আর আসে না। আরও একবার বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে খানিক দিশেহারা অভিনেত্রী রসিকতা করে বলেন, “বিয়ে ছাড়াই ১৩ বছর কেটে গেছে, আরও ১৩টা বছর কেটে যাবে।” এই রসিকতা তাদের সম্পর্কের সহজ ও মজাদার দিকটি ফুটিয়ে তোলে। তবে এই জনপ্রিয় জুটি কবে আনুষ্ঠানিক ভাবে গাঁটছড়া বাঁধবেন, তা জানতে ভক্তদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তাদের প্রেম কাহিনিতে রান্না, স্বপ্ন আর খুনসুটি মিশে তৈরি হয়েছে এক ভিন্ন স্বাদ।